background img

The New Stuff

ইন্টারন্যশনাল লিনিয়ার কোলাইডার-২! লার্জ হ্যাড্রন কোলাইডার কিভাবে কাজ করবে?-১

২য় পর্ব
(এখানে একটা ব্যাপার পরিস্কার করে দেই যে লার্জ হ্যাড্রন কোলাইডার এখন জেনেভায় অলরেডী বসানো হয়ে গেছে আর ইন্টারন্যাশনাল লিনিয়ার কোলাইডার নিয়ে এখনও পরিকল্পনা চলছে। তবে বিজ্ঞানীরা আগে এলএইচসি নিয়েই কাজ করতে ইচ্ছুক বিধায় আইএলসি এর স্হাপনের ব্যাপারে তেমন কোনো আগ্রহ নেই আপাতত। তবে এমনও হতে পারে আইএলসি পৃথিবীর বাইরে কোথাও স্হাপন করা হতে পারে।
তাই এ দুটো কনফিউজড না হওয়াই উত্তম আর আমার লেখা পর্যায়ক্রমে এলএইচসি এর পর আইএলসি তারপর এসব পরীক্ষার ব্যাখ্যা দেয়া হবে পদার্থবিজ্ঞানের প্রচলিত সূত্রের আলোকে দীর্ঘসময় ধরে! তাই অতিরিক্ত আর অযাচিত দীর্ঘ লেখার জন্য আগেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি আর ভুল হলে কোথাও আমাকে জানানোর অনুরোধ জানাচ্ছি!)
যখন ক্লাস টেন এ বায়োলজি ক্লাশের প্রাকটিক্যাল রুমে গেলাম তখন প্রথমে চোখে পড়ে মাইক্রোস্কোপ। আগে শুধু জানতাম এটা দিয়ে অতি ক্ষুদ্র জিনিস চাক্ষুস দেখা যায়। পরে জানতে পারলাম এগুলো আসলে অতটা শক্তিশালী নয়, কারন যখন হাবল টেলিস্কোপ অথবা ন্যানোস্কেলের মাইক্রোস্কোপের কথা আসে তখন দেখা যায় এগুলো তাদের কাছে নাদান বলেই মনে হয়। তবে যত শক্তিশালী মাইক্রোস্কোপই হোক না, একসময় দেখা যায় এগুলো সেন্সর ডিপেন্ডেড ডিজাইন হয়ে যায়। হয়তোবা এমন যে এতো ক্ষুদ্র জিনিস দেখতে হলে প্রথমে ওতে সূক্ষ্য তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের আলো ফেলা হয়। যখন সে ঐ অনুর ভিতর দিয়ে প্রবেশ করবে তখন সে বাধাপ্রাপ্ত বা প্রতিসরিত বা এর তরঙ্গ দৈর্ঘ্যে সামান্য পরিবর্তন হবে যার ফলে দেখা যাবে ঐ পরিবর্তনের উপর নির্ভর করে সমস্ত ক্যালকুলেশন সম্পন্ন হয়ে ভিজ্যুয়ালাইজড কিছু আসবে। খুবই ক্ষদ্র পর্যায়ে গিয়ে দেখা যাবে আসলে সেন্সর সার্কিটারি ডিপেন্ডেড হয়ে পড়ে এবং এসব উপাত্তের ক্যালকুলেশনের জন্য একটা শক্তিশালী কম্পি্উটার যার থাকবে প্রচুর পরিমান ক্যাশ এবং স্ট্যাটিক মেমোরি!
আমরা লার্জ হ্যাড্রন কোলাইডারকে সেরকমই একটা তাবৎকালের সবচেয়ে শক্তিশালী মাইক্রোস্কোপ (কারন এখানে ন্যানোর ন্যানো মিটার স্কেলে উকিঝুকি মারার ক্ষমতা রাখে) চিন্তা করতে পারি যেটা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে জেনেভা শহরের পাশে গ্রামের লোকালয় হতে একটু দূরে অবস্হিত এবং দুঃখের ব্যাপার হলো আমার ওখানে নিজে গিয়ে দেখার সৌভাগ্য আদৌ হয়নি! যাই হোউক এখানে যেসব পরীক্ষা গুলো হবে সেখানে প্রচুর এনার্জি নিয়ে কাজ করা হবে খুব ছোট স্কেলের ভরের উপর। এনার্জি স্কেলটা হবে টেরা ইলেক্ট্রন ভোল্টের সমান মান এক ট্রিলিয়ান ইলেক্ট্রন ভোল্ট। এটা মূলত হিগস পার্টক্যালকে ফাদে ফেলার জন্য ই হতে পারে এবং সাথে সাথে দেখা যাবে অতি উত্তেজিত বা অতি চার্জায়িত কণাগুলোর সংঘের্ষ এই স্কেলে ডার্ক ম্যাটারেরও জন্ম দিতে পারে তৎক্ষনাত।

এলএইচসির এর কান্ডকারখানা

টেরাস্কেলের এই কোলাইডার আগের যত কোলাইডারে বেসিক প্যারামিটারের রেন্জ্ঞ ছিলো সবগুলোকেই ছাড়িয়ে গেছে। এটা শুরু হয়েছে এভাবে যে প্রথমে একটা প্রোটন বীমের সৃস্টি করা হবে যার এনার্জী লেভেল আগে তৈরী কৃত যত বীমগুলো ছিলো তার চাইতে অনেক বেশী। এই প্রোটনকে আলোর কাছাকাছি স্পীডে চালনা করার জন্য ব্যাশার করা হয়েছে 7000 শক্তিশালী ম্যাগনেটের পথ যেগুলো তরল হিলিয়াম দ্বারা ঠান্ডা করে রাখা হয়েছে: মোটামুটি দুই ক্যালভিনের কম তাপমাত্রায় যার ফলে এগুলো সুপার কন্ডাক্টরের মতো কাজ করে, যার ফলে সৃস্টি তড়িৎচৌম্বকিয় বল এই দুটো বীমকে নির্দিস্ট ডিরেকশনে আলোর গতির কাছাকাছিতে চালনা করতে পারে।প্রতিটা প্রোটনের চার্জ হবে 7 টেরাইলেক্ট্রন ভোল্টের মতো যার এ্যানর্জি লেভেল হবে 7000 গুন বেশী (আইনস্টাইনের E=mc2 অনুসারে)। তবে এখানে একটা জিনিস খেয়াল রাখা হবে এই মেশিনটা এমন ভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যে একটা বীম তৈরীর সময় এর ল্যুমিনোসিটি আর উজ্জলতার তীব্রতা 40 গুন বেশী রাখা হবে ফার্মিল্যাবের টেভাট্রন কোলাইডারের থেকে।যখন প্রোটন গুলো তার সর্বোচ্চ এনার্জি লেভেলে আর ম্যাগনেট গুলো সম্পূর্ন রূপে প্রস্তুত হবে, তখন সমস্ত ঘর্নায়মান কণাসমূহের এনার্জি লেভেল বা গতিশক্তি এতটাই প্রবল থাকবে যে এটাকে তুলনা করা যেতে পারে ধরা যাক 900 টা গাড়ির প্রতিটাই ভ্রমন করছে 100 কিলোমিটার পার ঘন্টায় অথবা ঐ পারিমান শক্তি যার মাধ্যমে 2000 লিটার পানি গরম যাবে কফি খাবার জন্য!

পরীক্ষার জন্য কি নিয়ে কাজ করা হবে?

এখানে পরীক্ষার মূল উপাদান হচ্ছে কয়েক গুচ্ছ প্রোটনের বীম যার ভ্যালোসিটি হবে আলোর গতির 99.9999991% যাদেরকে বিশেষ পরিবেশে সংঘর্ষে লিপ্ত করানো হবে বিশেষ প্রক্রিয়ায়। এখানে একটা কথা হয়তো না বললেই নয় আগের এক্সিলেটর গুলো যেমন প্রটোন সিন্কট্রন এবং সুপার প্রোটন সিন্কট্রন দ্বারা প্রোটনকে আলোর গতির 99.99975% কাছাকাছি নিয়ে যেতে পারত যেখানে এই এলএইচসি প্রোটন এ্যানর্জিকে 16 গুন বেশী বাড়িয়ে দেয় এবং সংঘর্ষায়িত করে 300 লক্ষবার পার সেকেন্ড 10 ঘন্টা ধরে সর্বোচ্চ! এরকম 4টা মূল পরীক্ষা মূলত 100টেরাবাইটেরও বেশী সংঘর্ষের উপাত্ত দিতে পারে প্রতি সেকেন্ডে। আর এই কোলাইডারে এসবে ক্ষেত্রে কাজে লাগাবে কিছুসংখ্যক প্রোটনের বীম যার এক গুচ্ছ বীমে প্রোটনের সংখ্যা থাকবে 100 বিলিয়নের মতো যার আকার হবে সুইয়ের মতো, কয়েক সেন্টিমিটার দৈর্ঘের এবং কলিশন পয়েন্টে মানুষের চুলের মতো চিকন হয়ে যাবে আর প্রোটনগুলোর মোট গুচ্ছের সংখ্যা 2808 এবং ভ্রমন করবে কোলাইডারে প্রায় 27 কিলোমিটারের মতো। প্রতিটা বীমের গুচ্ছ 4 টা জায়গায় থেকে 310 লক্ষবার একে অপরকে অতিক্রম করবার সময় সংঘর্ষে লিপ্ত হবে এবং প্রতিটা অতিক্রান্ত মূহুর্তে 20 টা সংঘর্ষ ঘটবে অথবা প্রতি সেকেন্ডে 6000 কণা সংঘর্ষে অংশগ্রহন করবে। আমি আগেই বলেছিলাম এসব সংঘর্ষের জন্য নানা উপাত্তের প্রয়োজন হবে কিন্তু প্রধান সমস্যা হলো এত দ্রুত এবং স্পিডি সেন্সর ডিজাইন করাও খুব ভাবনার ব্যাপার এ যেনো এমন ধান ফলানোর চাইতে ধান কে পাহারা দেবে সেটাই মুখ্য বিষয় হয়ে গেছে। যাই হোউক প্রতিটা সংঘর্ষের জন্য 1.5 মেগাবাইটের ডাটা পাওয়া যাবে আপাতত আর যতটুকু থিওরী জানা আর বিশ্বাস আছে প্রতি 2.5 সেকেন্ডে 1 টা হিগস পার্টিক্যাল পাওয়া যেতে পারে যদি বীমের ল্যুমিনোসিটি 100% আর হিগসের প্রচলিত বা আদর্শ এ্যাসাম্পশনের পরিবেশ অক্ষুন্ন থাকে!
চলবে.....

0 মন্তব্য(গুলি):

Post a Comment

Welcome!

Popular Posts